প্রেমিকার প্রত্যাবর্তনের প্রহসন
রাত ৩ টার দিকে প্রেমিকার ফোন ওয়েটিং। কল ধরতেই বললাম ওয়েটিং কেন? তার উত্তর "নাজমুল তুমি কি আমাকে সন্দেহ করো"? আমি বললাম আরে না। সমস্যা থাকতেই পারে। এইখানে সন্দেহের কি আছে? কয়েকদিন আগে যমুনাতে দেখলাম ছিঁড়াফাটা প্যান্ট পরা এক ছেলের হাত ধরে ঘুরে বাড়াচ্ছে। এগিয়ে গিয়ে বললাম। এই ছেলে কে? সে উত্তর দিলো, নাজমুল তুমি কি আমাকে সন্দেহ করো। আমি বললাম আরে না। ছোট ভাই ব্রাদার থাকতেই পারে এইখানে সন্দেহের কি আছে।
একদিন কাছের খুব ছোটো ভাই কল দিয়ে বললো, ভাই ভাবীর তো বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।আপনি তো ছ্যাকা খাইলেন। সাথে সাতেই প্রেমিকারে কল দিয়ে কইলাম ঘটনা কি সত্য? সে বলে "দেখো বিয়েটা আমার বাবার জন্য করা। বাবার হার্টের অসুখ। তাই বিয়েটা করছি। কিন্তু আমিতো তোমাকেই ভালবাসি। কিছুদিন পরে আমিতো তোমার কাছেই ফিরে আসবো"। আমি আমতা আমতা করে বললাম "কিন্তু"? সে উত্তর দিলো দেখো" আমি ভার্জিন। তোমার কাছে ভার্জিন হিসাবেই ফিরে যাবো"। আমি বললাম "কিন্তু"। সে বললো " কিন্তু কি? তুমি কি আমাকে সন্দেহ করো? আমি বললাম আরে না না। এইখানে সন্দেহের কি আছে। সমস্যা হতেই পারে।
পার্কে প্রেমিকাকে ছোটো একটা বাচ্চা কোলে নিয়ে হাঁটতে দেখলাম। এগিয়ে গিয়ে বললাম এই বাচ্চা কে? সেই উত্তর দিলো " এটা আমারই বাচ্চা। কিছুদিন আগেই হয়েছে। আমি আমতা আমতা করে বললাম কিন্তু তুমি তো বলেছিলে। আমি বলার আগেই সে উত্তর দিলো দেখো নাজমুল হঠাৎ কি করে যেন কি হয়ে গেলো আমি আসলে বুঝতে পারিনি। বিশ্বাস করো আর কখনো এমন হবে না। এটাই শেষ বাচ্চা। আমি তোমাকে খুব ভালো বাসি। তুমি আমার জন্য ওয়েট করো আমি ফিরে আসবো। আমি কিছু বলতে যাবো এর আগেই ও বলে উঠলো "তুমি কি আমাকে সন্দেহ করো"?
একটা স্কুল দিয়েছি। বাচ্চাদের পড়াই। পড়াতে ভালোই লাগে। একদিন সেখানে আমার প্রেমিকা এসে উপস্থিত। সাথে ৪-৫ টা বাচ্চা। দেখলেই বোঝা যায় পিঠেপিঠি বাচ্চা এসব। কিছু বলতে যাবো এর আগেই সে বলে উঠলো এসব বাচ্চা তার। স্বামী অশিক্ষিত তাই পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে কোনো জ্ঞান নেই। যার বলে এই দশা। আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই সে বলে উঠলো জানি নাজমুল জানি তুমি কি বলতে চাও।কিন্তু বিশ্বাস করো আমি চেষ্টা করছি। আর কিছুদিনের মধ্যেই আমি তোমার কাছে চলে আসবো।
এখন আমার বুড়া বয়স। কোনো রকমে লাঠি নিয়ে পথচলি। বাবা মা ভাই বোন দুনিয়াতে কেউ বেঁচে নেই। সেই প্রেমিকার আশায় এখনো বিয়ে করিনি। দেখাশুনা করার কোনো মানুষ আমার কাছে নাই। পাশের বাড়ির মতিনের ছেলে রহমান কিছুদিন থেকে বলছে নাজমুল আঙ্কেল এই বয়সে একটা নার্সের ব্যবস্থা করে দেই। অসুখ-বিসুখে আপনার সেবাযত্ন করবে।
কদিন থেকে জ্বরে ভুগছি। দেখবার মতো কেউ নেই। রহমান একটা মেয়ে নার্সের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। সেই সেবাযত্ন করছে টুকটাক। মেয়েটা বেশ সুন্দর। যৌবন থাকলে বিয়ে করতাম। সে খুব সেবাযত্ন করছে আমার। এই যে এখন তুলে খাওয়াচ্ছে। এমন সময় ঘরে এক বৃদ্ধা মহিলার প্রবেশ। জীবনে দেখছি কিনা মনে পড়ছে না। নার্সকে বললাম তুমি কন্টিনিউ করো। এমন সময় সেই বৃদ্ধা এগিয়ে এসে বললো " নাজমুল এই ছিল তোমার মনে? তুমি আমার জন্য ওয়েট করতে পারলা না? অবশেষে তুমি কিনা,মেয়ের বয়সী একটা মেয়েকে!ছিঃ নাজমুল ছিঃ আমার ভাবতে কষ্ট হচ্ছে তোমার ভালবাসা এতটাই নগন্য যে আমার জন্য আর কটা দিন অপেক্ষা করতে পারলে না? কন্ঠ শুনে বুঝলাম আরে এটা তো আমার সেই প্রেমিকা। কিছু বলতে যাবো বরাবরের মতো সেই আগে বললো " এই ছিল তোমার মনে। এই জন্য ছেলেদের বিশ্বাস করতে নেই। আমি ভুল করেছি তোমার মতো ছেলেকে ভালবেসে। তোমাকে আমি ঘৃণা করি। এবার আমি বললাম তুমিও তো বলেছিলে আমার কাছে সেই কবে ভার্জিন হয়ে ফিরে আসবে। কিন্তু এখন তো আমার কিছুই করার নেই। সে বলে উঠলো " আমিতো এখনো ভার্জিন নাজমুল"। মাথা ঘুরতে লাগলো, মনে হয় প্রেসার বেড়ে যাচ্ছে। সাইন্সের সব থিউরি উল্টে দিয়ে পাঁচটা বাচ্চার মা হওয়ার পরেও আমার প্রেমিকা নিজেকে ভার্জিন দাবি করে। কিছু বলতে যাবো এর আগেই সে বরাবরের মতো বলে উঠলো " নাজমুল তুমি আমাকে সন্দেহ করো?
সন্দেহ
নাজমুল ইসলাম।
javascript: void(0)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন